রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫২ অপরাহ্ন

পশ্চিমবঙ্গ রাজনীতিতে নতুন চমক!

পশ্চিমবঙ্গ রাজনীতিতে নতুন চমক!

স্বদেশ ডেস্ক: ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজনীতিতে নতুন চমক আসতে যাচ্ছে বলে গুঞ্জন চলছে। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি প্রথম টার্গেট এখন পশ্চিমবঙ্গ। এই লক্ষ্যে তারা মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল থেকে নেতাকর্মীদের দলে ভেড়াচ্ছে। আবার মমতাও হাল ছেড়ে দেননি। তিনিও খেলা দেখাচ্ছেন। এ নিয়েই এই প্রতিবেদন

দিল্লিতে গিয়ে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এরপর রাজ্য বিজেপি দফতরে গিয়ে সম্বর্ধনাও নিয়েছেন কলকাতার সাবেক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তবে মঙ্গলবার আইসিসিআর সভাগৃহে বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন ২০১৯-এর রাজ্য কর্মশালায় গরহাজির থাকলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, কেন আসলেন না শোভনবাবু? এ প্রশ্নের জবাবে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘কেন আসেননি খোঁজ নিয়ে দেখব’। এদিকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-র তরফে অধ্যাপিকা তথা শোভনের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি সাধারণ সদস্য, আমাকে সাংগঠনিক নির্বাচনে ডাকার কথা নয়। কিন্তু, শোভন দা’কেও আমন্ত্রণ করা হয়নি। উনি আমন্ত্রণ না পেলে, কী করে যাবেন?”

উল্লেখ্য, বিজেপিতে যোগদানের পর কলকাতায় দলের সদর দফতরে সাংবাদমাধ্যমের সামনে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, দিলীপ ঘোষ এবং নেতৃত্ব তাকে যেভাবে ব্যবহার করতে চাইবে, তিনি সেভাবেই কাজ করবেন। অথচ এর কয়েক দিনের মধ্যেই সাংগঠনিক নির্বাচন কর্মশালার মত দলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সভায় শোভনের অনুপস্থিতি এবং এই অনুপস্থিতির কারণ সম্পর্কে দিলীপ ও বৈশাখীর বয়ানের ফারাক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। এ বিষয়ে অভিনেত্রী তথা তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়ের বিজেপিতে যোগদানের তীব্র জল্পনার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলেও মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।

শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদ্মশিবিরে যোগদান ঘিরে বঙ্গ রাজনীতি রীতিমতো সরগরম হয় উঠেছিল। সেই উত্তাপ এখনও কিছুটা জারি আছে। শোভন-বৈশাখী জুটি বিজেপিতে যোগ দেবে কি না তা নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। কিন্তু শেষমেষ বিজেপিতে যোগ দিয়েও দলের সঙ্গে তারা মানাতে পারছেন কি না সেই নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, চলতি বছর ১৪ অগাস্ট দিল্লিতে বিজেপি-তে যোগদানের সময়েই তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায় সেখানে হাজির হওয়ায় ‘গোঁসা’ হয়েছিল শোভন-বৈশাখীর। দেবশ্রীকে দলে নিলে শোভন কিছুতেই পদ্ম পতাকা হাতে তুলবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন। এরপরই শোভনকে যোগদান করাতে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব সেদিন কথা দেন যে দেবশ্রীকে দলে যোগদিতে দেওয়া হবে না। এই শর্তেই শেষ পর্যন্ত বিজেপিতে যোগদেন শোভন-বৈশাখী।

এরপর কলকাতায় রাজ্য দফতরে শোভনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রণ করা হয়নি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বৈশাখী। তিনি এতটাই ‘আহত’ হয়েছিলেন যে বলেছিলেন, ‘বিজেপিতে আর পা রাখতাম না, শুধু শোভনবাবুর জন্যই যাচ্ছি (সেদিনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে)’। তবে বৈশাখীর নাম আমন্ত্রণপত্রে না ছাপার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, ‘‘আমি সবাইকে আসতে বলেছি। সবার তো নাম দিই না আমরা। শোভনবাবু মেয়র ছিলেন, বিধায়ক, তাই ওঁর নাম দেওয়া হয়েছে। তবে ওর (বৈশাখী) নামও দেয়া উচিত ছিল’’। এরপরই হেসে দিলীপ বলেছিলেন, ‘‘তাছাড়া আমরা জানি, যেমন ভাত-ডাল, তেমনই শোভনদা-বৈশাখীদি। আলাদা করে বলার কী আছে!’’ এরপর সেদিনের সংবর্ধনার অনুষ্ঠানে আগাগোড়া গোমড়া মুখে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল বৈশাখীদেবীকে। ‘ডাল-ভাত’ প্রসঙ্গে সেদিন বৈশাখীকে সরাসরি প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, তার নিজস্ব পরিচয় আছে, তিনি সেই পরিচয়েই স্বচ্ছন্দ। সেই থেকেই বৈশাখী বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের প্রতি ‘বিরক্ত’।

এমতাবস্থায় কয়েক দিন ধরে আবার দেবশ্রী রায়ের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা গতি পেয়েছে। শোনা যাচ্ছে, শোভনবাবুকে বুঝিয়ে দেবশ্রী রায়কে দলে নেওয়ার বিষয়টি একপ্রকার পাকা করে ফেলেছে গেরুয়া নেতৃত্ব। আর এতেই নাকি চরম ক্ষুব্ধ শোভন-বৈশাখী। এই পরিস্থিতিতে এদিনের গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক নির্বাচনে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি রীতিমতো বড় জল্পনার রসদ যোগাচ্ছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877